চাঁদপুর শহরের উকিলপাড়া এলাকায় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রাহিমা বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার স্বামী ও ভুক্তভোগী পরিবার। শুক্রবার রাতে ওই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে গৃহবধূর মৃত্যু হয়। তবে মা মারা গেলেও সিজারের মাধ্যমে কন্যা শিশুর জন্ম হয়। ঘটনার তিন ঘণ্টা পর জানাজানি হলে নতুন বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

নিহত রাহিমা বেগম সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের আখনের হাট এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী মনির হোসেনের স্ত্রী। স্বামী মনির হোসেন জানায়, আমার স্ত্রী রাহিমা প্রায় ২ বছর ধরে ডা. শামসুন্নাহার তানিয়ার তত্ত্বাবধানে ছিলেন। রাহিমার সিজার করেন গাইনি ডা. শামসুন্নাহার তানিয়া ও এনেসথেসিয়া করেন ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় চাঁদপুর আল-আমিন হাসপাতাল লি. এ ভর্তি করা হয়। তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুরে হাসপাতালে সিজারের জন্য ওটিতে নেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর ওটি থেকে কন্যা সন্তান হয়েছে বলে জানানো হয়।

তবে প্রায় ১ ঘণ্টা অতিক্রম হয়ে গেলেও আমার স্ত্রী কেমন আছে জানায়নি। পরে আমি জোর করে ওটিতে প্রবেশ করি। তখন আমাকে বলা হয় আমার স্ত্রী মারা গেছে। তিনি আরও বলেন, সিজার করে ডা. তানিয়া চলে গেলেও হাসপাতালের কেউ মৃত্যুর বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। গৃহবধূর শাশুড়ি বলেন, ডা. তানিয়া আমার ছেলের বৌরে মেরে ফেলছে। গৃহবধূর পিতা জয়নাল গাজী বলেন, ৪ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে মনির হোসেনের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও ডা. তানিয়ার ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

নতুন বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঘটনার অনেক পরে জানানো হয়েছে। আমরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি এবং কাগজপত্র পর্যালোচনা করেছি। তবে কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে ডা. শামসুন্নাহার তানিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে মৃত্যুর ঘটনায় বিষয়টি নিয়ে গৃহবধূর পরিবারের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একটা মীমাংসার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।